জর্ডানে শিক্ষকদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন, আটক ১০০০


Dhaka | Published: 2020-08-19 19:48:31 BdST | Updated: 2024-05-18 18:28:51 BdST

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত অক্টোবরে জর্ডানের সরকারি খাতের ইতিহাসে দীর্ঘতম ধর্মঘটের আয়োজন করেছিল দেশটির বৃহত্তম শিক্ষক সংগঠন। এরপর থেকেই শিক্ষকদের এ ট্রেড ইউনিয়নের ওপর নেমে এসেছে সরকারের দমন-পীড়ন। ইতোমধ্যেই অন্তত এক হাজার শিক্ষককে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাদের আইনজীবীরা।

ইউনিয়নের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, গত মাসে হঠাৎ করেই দেশজুড়ে সংগঠনটির সব শাখা সিলগালা করে দেয় পুলিশ। দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এর সব ধরনের কার্যক্রম। গোপন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ট্রেড ইউনিয়নের ১৩ জন নির্বাচিত সদস্যকেই।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষকদের আটকাতে ব্যবহার করা হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে পাস করা করোনা নিয়ন্ত্রণ আইন। ইউনিয়নের সদস্য ও আন্দোলনকারী শিক্ষকদের গ্রেফতারের খবর প্রচার না করতে কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জর্ডানের গণমাধ্যমগুলোকে।

জর্ডান কোনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়, তবে সৌদি আরব ও মিসরের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় তারা তুলনামূলক বহুত্ববাদী এবং ভিন্নমতের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল বলে মনে করা হয়। দেশটিতে একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বিক্ষোভের অনুমতি দেয়া হয় এবং গণমাধ্যমগুলোও সরকারি নীতির সমালোচনা করতে পারে। তবে সুবিধাজনক এই অবস্থানটি দিনদিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে এবং প্রতিবছরই বিনা বিচারে গ্রেফতার হওয়া লোকের সংখ্যা বাড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শিক্ষক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এ অভিযানের কৌশল পরিবর্তিত হয়ে আরও দমনমূলক হয়ে উঠতে পারে।

জর্ডান সরকার বলছে, শিক্ষক সংগঠন বন্ধ করে দেয়া এবং এর নেতাদের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির স্বাধীন বিচার বিভাগ। সরকারের মুখপাত্র আমজাদ অ্যাদেলা বলেন, সব আদেশ জারি করেছেন প্রসিকিউটর জেনারেল, যারা বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং আইন ও সংবিধান অনুযায়ী তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকেন।

আবার, সরকারের সমর্থকরা ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এ অভিযানকে আরব সম্রাজ্য এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে বৃহত্তর আঞ্চলিক লড়াইয়ের অংশ বলে দাবি করেছেন। শিক্ষক ইউনিয়ন বন্ধ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই বহুজাতিক ইসলামপন্থী দল ব্রাদারহুডকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল জর্ডান।

আম্মানের কূটনীতিকদের দাবি, শিক্ষক ইউনিয়নের সঙ্গে অবশ্যই মুসলিম ব্রাদারহুডের যোগসূত্র রয়েছে। সংগঠনটির সভাপতিসহ অন্তত এক-তৃতীয়াংশ সদস্যই ব্রাদারহুডের সদস্য বলে দাবি করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান