আরেফিন স্যারকে জাতীয় স্বার্থে আরেক মেয়াদে ভিসি নির্বাচিত করা প্রয়োজন


আবু ইউনুস | Published: 2017-08-09 07:22:33 BdST | Updated: 2025-05-29 15:55:52 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্যানেলকে ঘিরে যারা আন্দোলনে-আদালতে গিয়েছেন, তারা দিনদিন নিজেদেরকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। শুরুটা উপাচার্য প্যানেলকে অবৈধ দাবি করার পেছনের আইনি-নৈতিক আলোচনা ছেড়ে উপাচার্য আরেফিন স্যারের সফলতা-ব্যর্থতার বিচারের ভিত্তিতে উপাচার্যকে আরেকবারের জন্যে অযোগ্য প্রমাণের অপচেষ্টার মধ্য দিয়ে। প্যানেলের বৈধতা-অবৈধতা আর উপাচার্য হবার যোগ্যতা-অযোগ্যতায় উনারা তালগোল পাকিয়ে নিজেদের করা “উপাচার্য প্যানেল অবৈধ” দাবিটির আবেদন হারিয়ে ফেলেছেন।

বিজ্ঞাপন

আবেদন হারিয়ে ফেলা এই দাবির প্রেক্ষিতে তবুও উনাদেরকে একটু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়, যে আপনারা ২০১৩ সালে ৫০ সদস্যের সিনেটে ৩৬ জনের উপস্থিতিতে ভিসি প্যানেল নির্বাচন করেছিলেন, সে আপনারাই কেন আজ ৫৫ সদস্যের সিনেটে ৪৭ জনের উপস্থিতিতে পাস হওয়া প্যানেলের অবৈধতা দাবি করছেন? গতবারের চেয়ে তো এবারের সিনেটে সদস্য বেশি ৫ জন, অধিবেশনে উপস্থিত বেশি ১১জন, তবে কি এবারেরটা সেবারের চেয়ে বেশি বৈধ হবার কথা নয়? এই প্রশ্নে হেরে যারা নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে আরেফিন স্যারের আরেক মেয়াদে ভিসি হওয়া ঠেকাতে চান, উনারা যে বিশ্ববিদ্যালয় ভালোর জন্যে নয়, বরং নিজেদের অপূর্ণ কোন স্বার্থ হাসিলের জন্যে চাচ্ছেন, সেটি আরেফিন স্যারের দুই মেয়াদে উনাদের প্রশাসনিক অবস্থান দেখলেই বুঝা যায়।

তবে, এতসবকে ছাপিয়ে ঢাবির জন্যে সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, বিরোধীতাকারী শিক্ষক ও ছাত্রদের পক্ষগুলোর বৃহৎ দুটিই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচিত। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের এই যুদ্ধের পরিণতি কী হবে, বলা দুরূহ। তবে সাম্প্রতিক সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এটুকু বলতে পারি যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লাভবান হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত জামায়াত-শিবির চক্র। বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে বিতারিত হওয়া শিবির ক্যাডারদের ফেসবুকে উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস ও কমেন্ট দেখে আমরা উদ্বিগ্ন।

আরেফিন স্যার টানা আটবছর ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল রাখার যে অসাধ্যসাধন করেছেন, সেটি যদি প্রগতিশীল শক্তিগুলোর অভ্যন্তরীণ স্বার্থদ্বন্দ্বে ভেস্তে যায়, তবে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, গোটা জাতিকেই এর মাসুল দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি পরিচয় দেয়া কতেক মানুষের স্বার্থদ্বন্দ্বে উপাচার্য প্যানেল দিয়ে শুরু হওয়া এই ক্ষতিকে দেশের কিছু নামকরা (কিন্তু ক্রান্তিকালে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা রাখা) মিডিয়া “সংবাদপত্রের অবাধ স্বাধীনতা” অপব্যবহারের মাধ্যমে নানা প্রোপাগান্ডা সৃষ্টি করে আরো অনেক জটিল করে তুলছে। মিডিয়ার এই নির্লজ্জ ভূমিকাকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া এই মুখগুলো সেদিন খুব ধিক্কৃত হবার আশংকা রাখে, যেদিন তাদেরদের চালের গুটিটা জামায়াত-শিবিরের মোক্ষম অস্ত্র হয়ে দাঁড়াবে। বিব্রতকর এই সাম্প্রতিক বিতর্কে জামায়াত-শিবিরের বুনো উল্লাস দেখে এটুকুই

শুধু বলা যায়, “আরেফিন স্যারকে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, জাতীয় স্বার্থেও আরেক মেয়াদে ভিসি নির্বাচিত করা প্রয়োজন, অবশ্যই প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

” পছন্দ একটাই, “আরেফিন স্যার।”

লেখকঃ শিক্ষার্থী, অনার্স ৩য় বর্ষ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

এমএসএল