'৭ ডাকসু নেতার ভর্তি অবৈধ আন্দোলনে'র কোন গ্রাউন্ড নেই: ডাকসু সাহিত্য সম্পাদক


Dhaka | Published: 2019-09-20 10:16:40 BdST | Updated: 2024-05-08 10:43:40 BdST

১৯৯০ সালের ডাকসু নির্বাচনের দিন কয়েক আগে আগে ডাকসুর ভিপি আমানউল্লাহ আমান জিএস খায়রুল কবির খোকন সহ ছাত্রদলের ২০০ জন নেতা পুষ্টিবিজ্ঞানে ভর্তি হন। এর আগের বছর ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নের মনসুর-মোশতাক- নাসির প্যানেলের ডা. মোশতাক ছিলেন মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। পুষ্টিতে ভর্তি হয়ে ডাকসুর জিএস হন। মাহমুদুর রহমান মান্না তো চাকসুর জিএস ছিলেন, সেখান থেকে ম্যাথের মাস্টার্সে ভর্তি হয়ে ডাকসুর দুই বারের ভিপি। ডাকসুর সবচেয়ে বিখ্যাত ভিপি তোফায়েল আহমেদ প্রায়শই বলেন ততকালীন ভিসি তাকে সয়েল সাইন্সে ভর্তি না করলে তিনি আজকের তোফায়েল আহমেদ হয়ে উঠতে পারতেন না। ডাকসুতে এরকম উদাহরণ অসংখ্য। এগুলি হচ্ছে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস। তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ হলেও ডাকসু নেতা হিসেবে কেওই অসম্মানিত নন। এখনকার দিনে যারা শখ করে হুট করে ডাকসু দেখে সিজোনাল পলিটিশিয়ান হয়ে রং মাখামাখি করছেন তাদের অবশ্য এসব ইতিহাস জানার কথা নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোন নির্দিষ্ট কোর্সের যৌক্তিকতা- অযৌক্তিকতা একটি ভিন্ন বিতর্ক। তবে ব্যাক্তিগত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করে একজন ছাত্র তুলনামূলক বেশী প্রতিযোগিতামূলক আন্ডারগ্রাজুয়েট পরীক্ষায় উর্ত্তীন্ন হওয়ার পর অন্য কোন জায়গায় স্নাতকোত্তরের জন্য আলাদা লিখিত পরীক্ষা দেওয়া একরকম বাহুল্য। যেখনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে চাকুরিজীবীরা ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি ভর্তি হতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অনুষদের চেয়ে তুলনামূলক আধুনিকতায় এগিয়ে থাকা ব্যাবসায় শিক্ষা অনুষদ তাদের নিজস্ব স্নাতকোত্তর কোর্সের ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের জন্য লিখিত পরীক্ষার নিয়মটি শিথিল করে। এবং এই নিয়ম অনুষদের বৈঠকে গত বছরের ১৮/৪/২০১৮ তারিখের এজেন্ডায় আলোচিত হয়ে ১৬/৭/২০১৮ তারিখে অনুমোদিত হয়। এই সময়কাল ডাকসু নির্বাচনেরও প্রায় ৯ মাস আগে। এবং এই প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগের কর্মী ব্যাতিত আরো অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। মজার তথ্য হলো আমাদের যে ভিপি বলেছেন তিনি এই নিয়ম সম্পর্কে কিছু জানেন না, তার প্যানেলের জিএস প্রার্থীও এই একই প্রক্রিয়ায় ভর্তি হতে আবেদন করেছিলেন।

সাতজন ডাকসু নেতার ভর্তি অবৈধ এই আন্দোলনের কোন গ্রাউন্ড নেই। এই আন্দোলনের সূত্রপাত একটি পত্রিকা থেকে। যে পত্রিকা বাংলাদেশের বিরাজনৈতিকরণে বিশ্বাসী। পত্রিকাটি অতীতের ন্যায় জাতীয় নির্বাচনে গ্যাম্বলিংয়ে ব্যার্থ হয়ে ডাকসু নির্বাচনে তাদের একজন রিপোর্টারকে প্রার্থী বানায়। তাকে নামকাওয়াস্তে সাতদিনের জন্য চাকুরী থেকে অব্যহতি দিয়ে আবারো তুলে নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব পরিবর্তনের সময়টিকে পত্রিকাটি আবার টার্গেট করে। উত্তরপাড়ার কয়েকটি জায়গায় এনিয়ে বৈঠকও হয়।

আমাদের সাবেক উপাচার্য স্যার যে মন্তব্য করেছেন সে ব্যাপারে আমি হতাশ। প্রথমত, আইন প্রণয়নের সময় তিনি উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন না। দ্বিতীয়ত, তিনি নূন্যতম সিজিপিএ থাকার শর্ত না পূরণ করে সবচে বেশী সংখ্যাক শিক্ষক নিয়োগের রেকর্ড করেছিলেন, শুধুমাত্র অনার্স পাশে শিক্ষক বানিয়েছেন, পদহীন হয়েও বাড়ী আকঁড়ে ধরে রাখার পরও আমাদের মনে কিছুটা জায়গা ধরে রেখেছিলেন। বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা তার কাছ থেকে আশা করিনি।

( শিক্ষকরা আমার কাছে পরম শ্রদ্ধেয়,পূজনীয়। শিক্ষকদের নিয়ে মন্তব্য করতে চাইনা। সর্বশেষ অংশের মন্তব্য কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে দুঃখিত)

লেখক: মাজহারুল কবির শায়ন,সাহিত্য সম্পাদক, ডাকসু