মানুষ আজ শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত, কারো এতটুকু সময় নেই! কারোর প্রয়োজনে সাড়া দেওয়ার সময় কোথায়! চোখের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেও হূদয়ে এতটুকু সাড়া জাগে না। শুধু একটাই ভয়—না জানি কখন বিপদে পড়ি। ছোটবেলায় দেখতাম গ্রামের একজন বিপদে পড়লে সবাই একজোট হয়ে এগিয়ে আসত। হয়তো আর্থিক সক্ষমতা ছিল না, কিন্তু মনের ও দেহের সামর্থ্যকে যথেষ্ট কাজে লাগাত। আজো মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়, ফুল তার গন্ধ ছড়ায়; কিন্তু মানুষের যে ধর্ম ভালোবাসা, সেটা আজ অনেকে ভুলে গেছে। পরিবারে সন্তানদের আমরা উদারতার শিক্ষা দিতে পারি না। লেখাপড়া থেকে শুরু করে খাবার, পোশাক, যে কোনো কিছুতেই ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ এখনকার বাচ্চারাও কিভাবে নিজেদের স্বার্থ পূরণ করতে হয় তা জানে। ভাবলে খুব অবাক লাগে, মানুষ আজ শুধু নিজের জন্য বাঁচে। প্রতিবেশী, বন্ধু, সহকর্মী কারোর প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে চাই না। নতুন প্রজন্মকে আমরা এই স্বার্থপরতার জাল থেকে মুক্ত করতে না পারলে একটা সুন্দর সমাজের কথা আমরা ভাবতেও পারব না। আকাশের মতো উদার, সহনশীলতা হয়ে তৃণের মতো প্রাণখোলা হয়ে শিশু যাতে ভাবতে পারে, সেই শিক্ষা প্রত্যেক অভিভাবকের দেওয়া উচিত। কিন্তু যন্ত্রের মতো মানুষ গড়ার প্রতিযোগিতায় এইসব চিন্তা বিলুপ্তির পথে। তবে এটা হলফ করে বলা যায়, আগামী প্রজন্মের দায়িত্ব আমাদের সবার নিতে হবে। তাই তো স্বামী বিবেকানন্দ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায় আজো সদা জাগ্রত আমাদের অন্তরে, মননে, চিন্তায়, চেতনায়।
রকিবুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়