ইসলামী বক্তাদের রেজিস্ট্রেশন ও ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত


Dhaka | Published: 2020-12-04 06:49:40 BdST | Updated: 2024-05-04 10:32:00 BdST

ইসলাম ও আল্লাহর বিরুদ্ধে না বললেও বর্তমানে যদি কেউ আলেম-ওলামাদের সমালোচনা করে তাদেরকে নাস্তিক কিংবা অবৈধ সন্তান বলে সম্মোধন করে থাকে বর্তমান সময়ের ইউটিউব ও ফেসবুকে আলোচিত ও সমালোচিত বক্তারা। যদিও ইসলাম ধর্মের কোথাও লেখা নেই যে কোন আলেমের সমালোচনা করা যাবে না। বকাবাজি তারা অনর্গল করেই যাচ্ছেন। সম্প্রতি ইউটিউবে কয়েকজন বক্তার ওয়াজ শুনে এ এরকম সম্বোধন দেখে খুবই অবাক। আমাদের আলেম সমাজ এরকম নিচুমানের ভাষা ব্যবহার শিখলো কবে?

আর এর ফলে নিজেরাই গুনাহের ভাগিদার হচ্ছেন। আমাদের আলেম সমাজের উচিত এসব গর্হিত সম্বোধন থেকে বিরত থাকা। মানুষ যতই খারাপ হোক তাকে এরকম ভাবে ডাকা উচিত নয়। আর আলেমদের জন্য তো এটা নিন্দনীয় কাজ। আর যদি কেউ অপরাধ করেও থাকে তাকে জারজ বলতে হবে কেন? তার বাবা-মা কী দোষ করলো? তাদের বাবা-মা যদি দোষ করেও থাকে সেটা কি ওই আলেম নিশ্চিত? এটাতো ইসলামে বৈধ নয়।

একজন মুসলমানকে সহজেই নাস্তিক বলে আখ্যা দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না এবং যাকে তাকে যখন তখন অবৈধ সন্তান বলে সম্বোধন করা ওই আলেমের নিচু মনের কাজ। যাকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলা হয় সে যদি সেরকম না হয়ে থাকে তবে সে সম্বোধনটি ওই আলমের দিকেই বর্তায় হাদিস অনুসারে। সুতরাং বর্তমান সময়ের আলেমদের আরো সচেতন হতে হবে।

তবে আরেকটি কথা, কেউ ইসলাম ধর্ম মানুক আর না মানুক ইসলামের যারা বক্তা এবং আলেম আছেন তারা অবশ্যই ইসলামের বয়ানগুলো পেশ করে যাবেন। মানা না মানা ব্যক্তির বিষয়। তবে কেউ যদি নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে থাকে তবে অবশ্যই তার ইসলাম ধর্মের কোন বেসিক আইন সম্পর্কে সমালোচনা করা উচিত নয়। ইসলামের বয়ান পেশ করতে হবে অবশ্যই কোরআন-সুন্নাহ অর্থাৎ দাওয়াহর যে পদ্ধতি আছে তা অনুসরণ করে। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ বক্তা এসব পদ্ধতি জানেন না এবং তাদের ভাষাগত জ্ঞান অনেকটাই নিচুমানের।

সময় এসেছে বক্তা রেজিস্ট্রেশন ইনস্টিটিউট খোলার। যেরকম আইনজীবীরা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট এ কাজ করতে পারেন না সেরকম। যে কেউ যখন তখন বক্তা হয়ে যাচ্ছে। আর ধর্মের সম্পর্কে গভীর জ্ঞান না জেনেই মানুষকে নসিয়ত করে যাচ্ছে যা ইসলাম সঙ্গত নয়। হাদিস অনুসারে "কেউ যদি ইসলাম এর একটি বাণী জানে তবে সে একটি বাণীই প্রচার করবে"। কিন্তু এসব বক্তারা না জেনেই অনেক কিছু বিভিন্ন স্টাইলে বলে বেড়াচ্ছেন। যার ফলে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষদের মাঝে। বাংলাদেশের শীর্ষ ওলামাদের নিয়ে অবশ্যই দ্রুত সময়ে সব ফেতনা বন্ধ করতে ইসলামী বক্তা রেজিস্ট্রেশন ইনস্টিউট অথবা সেন্টার এরকম কিছু একটা গঠন করা এখন সময়ের দাবি।

লেখক: এম এ লতিফ, সাংবাদিক