বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যা করা উচিত ও অনুচিত


Dhaka | Published: 2021-10-04 15:32:40 BdST | Updated: 2024-03-29 00:27:20 BdST

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে হঠাৎ নিজেকে কেমন জানি সুপিরিয়র মনে হয়।সব ভেঙেচুরে ধ্বংস করে দেয়ার মত শক্তিশালী মনে হয়।কেও জিতে,কেও চলার পথে হারিয়ে যায়।

আমার মতে বিশ্ববিদ্যালিয়ে এসে যে কাজগুলো করা উচিত...

১.অবশ্যই রেজাল্টের দিকে নজর দেয়া উচিত।বাদরামি, শয়তানি, প্রেম, আড্ডা-মাস্তি যাই করা হোক না কেন রেজাল্ট যেন একদম খারাপ না হয়ে যায়।

২.ভাল মেন্টালিটির বন্ধু বান্ধবের সাথে মেশা উচিত। যাদের স্বপ্ন বড়,চিন্তার জায়গাটা বিশাল, যারা সংকীর্ণতাকে স্থান দেয় না এমন বন্ধুদের সাথেই সময় কাটানো উচিত। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কেমন হবে এটা বন্ধুদের উপর অনেক বেশী নির্ভর করে।বন্ধু যেমন স্বপ্ন তৈরী করে দিতে পারে,বন্ধুই পারে স্বপ্নকে পিষে মেরে ফেলতে।

৩.ডিবেটিং, ফিল্ম, ফটোগ্রাফি, ক্যারিয়ার বা কালচারাল টাইপ কোন সংগঠনের সাথে কাজ করা উচিত।এতে চিন্তার বিকাশ হয়, নেটওয়ার্ক বাড়ে,নিজের নেতৃত্বের উপর আস্থা আসে। অনেক মানুষের সাথে মিশলে নিজের চরিত্র সুসংগঠিত হয়,যা সারাজীবন কাজে লাগে।

৪. এক দুইটা টিউশন করা উচিত।নিজের টাকায় চলায় আনন্দ আছে। নিজের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এই বয়সে সবার আসা উচিত।হঠাৎ বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা ট্যুর দিতে ইচ্ছা করবে,কিন্তু টাকা থাকবে না এইটা অনেক ভোগায়।সাথে চাকরীর প্রিপারেশন নিতে গেলে বোঝা যায় টিউশন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

৫. প্রতিটা মুহুর্ত উপভোগ করা উচিত। একদম বন্ধুদের কোন আড্ডা মিস দেয়া যাবে না,কোন ট্যুর মিস দেয়া উচিত না, কোন উৎসবে ঘরে বসে থাকা যাবে না। ঠিকমত উপভোগ করতে না পারলে ৪ বছর কিচ্ছুনা,বাকি জীবনের জন্য শুধু আফসোস হয়ে থাকবে।

কী করা উচিত না?

১.নিজের আত্মসম্মানবোধ যেখানে বিসর্জন দিতে হয় এমন বড়ভাই, বন্ধু, সংগঠন থেকে দূরে থাকা উচিত।বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের ছেলেমেয়েদের আচরণ হবে আদর্শের, মাথা থাকবে সর্বদা উচু,মাথা নীচু হয় এমন কোন জায়গায় যাবে না, এমন কিছু করবেও না।

২. বাজে বন্ধু, ক্রিপি টাইপ প্রেম থেকে বের হয়ে আসা উচিত।যে বন্ধু,প্রেমিক বা প্রেমিকা তোমাকে তোমার মত চলতে দেয় না, যেখানে তোমার স্বাধীনতা নাই,ওমন কাওকে জীবনে দরকার ও নাই।নিজের ভাল তো পাগল ও বোঝে, তুমি বুঝবা না কেন?

৩. ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে গেছি বলেই মুই কি হনুরে ভাব থেকে দূরে থাকা উচিত।বড় ভাই/বোনদের দিকে তাকালে বুঝবা হাজার হাজার মাস্টার্স পাশ ছেলেমেয়ে আছে যারা কোন রকমে দিনে এনে, দিনে খেয়ে জীবন চালায়।ভাল ভার্সিটিতে পড়াশোনা মানেই সাকসেস না।সাকসেস তোমার চেষ্টা,বাবা মা এর দোয়া আর সৃষ্টিকর্তার উপরে নির্ভর করবে।

৪. বাবা মায়ের পরিচয় দিতে কখনো লজ্জা করবা না।এ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাক্সিমাম আসে গ্রাম থেকে যাদের বাবা কৃষক, শ্রমিক,বা ছোটখাট কর্মজীবি।লজ্জার কিছু নাই।তোমার পরিচয়ে তোমার বাবা পরিচিত হবে, এই জন্যেই তোমাকে ভার্সিটিতে পড়তে পাঠাইছে।সে তো প্রাউড, তুমি লজ্জা পাবা কেন?

নাজিরুল ইসলাম নাদিম, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব টেক্স, ৩৮তম বিসিএস 

//