প্রথম সমাবর্তনে ডিগ্রি পেলেন ইইউবির ৭৫৫৯ শিক্ষার্থী


Desk report | Published: 2023-10-31 18:57:56 BdST | Updated: 2024-05-06 17:56:49 BdST

ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (ইইউবি) প্রথম সমাবর্তনে সাত হাজার ৫৫৯ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেছেন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৯৪৮ জন স্নাতক এবং ৬১১ জন স্নাতকোত্তর।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

রাষ্ট্রপতি ও ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ভাষাগত দক্ষতার কারণে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা অনেক পিছিয়ে আছে জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে আমাদের দেশের গ্র্যাজুয়েটদের তুলনা করলে দেখা যাবে, একটা বড় দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত হয়। আর সেটা হচ্ছে ভাষা। ভাষার ক্ষেত্রে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আমরা ইংরেজি ভাষায় একাডেমিক কাজগুলো করি সেটা সঠিক। কিন্তু ইংরেজি ভাষাকে ব্যবহার করে সেটাকে যোগাযোগের মাধ্যম বা কমিউনিকেশন টুল হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে উপমন্ত্রী বলেন, যেকোনো বয়সে যেকোনো বিষয়ে আমি পড়াশোনা করি না কেন, এই ভাষাগত জায়গায় আমাদের বেশি দখল নিতে হবে এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শুধু অনার্স-মাস্টার্স ইংরেজিতে থাকলে হবে না। দেখা যাচ্ছে যে, সেটা থাকলেও ভাষাগত যে দক্ষতা তাতে আমাদের কমতি আছে। আমরা প্রতিবেশী দেশগুলো দেখলে তাদের গ্র্যাজুয়েটদের এই জায়গাতে দক্ষতা বেশি বলে তারা পৃথিবীর নানা দেশে চাকরি পাচ্ছেন এবং করতে যাচ্ছেন।

নওফেল বলেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সমাবর্তনের মাধ্যমে একদিকে শিক্ষার্থীদের অর্জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব কার্যক্রমের সামগ্রিক মূল্যায়নের সুযোগ পায়। তাই প্রতিটি সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। আনন্দঘন এই অনুষ্ঠানে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন গ্র্যাজুয়েটদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি ধন্যবাদ জানাই অভিভাবক, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল আহমেদ খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইঞ্জিনিয়ার মো. আলিম দাদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান।

ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে চালাচ্ছে। শিক্ষার মান এই বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম কাতারের। বেতন ফি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় অনেক কম।

উপাচার্য ইঞ্জিনিয়ার মো. আলিম দাদ বলেন, ইইউবি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলেও মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যার ফলে, শুরু থেকে ফল সেমিস্টার ২০২০ এর মধ্যে সাত হাজার ৫৫৯ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেছে। তারমধ্যে ছয় হাজার ৯৪৮ জন স্নাতক ও ৬১১ জন স্নাতকোত্তর।

ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, ২০১২ সাল থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করলেও ২০১৬ সালে স্থায়ী জায়গায় ভবন তৈরি করেছে। বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও যেমন মান সম্মত তেমনি মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। দক্ষ ও মান সম্মত শিক্ষায় আমাদের আরও জোর দিতে হবে।

অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইইউবির প্রথম সমাবর্তনে উপস্থিত হতে পেরে আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ইইউবি কম খরচে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছে। কোভিড সময়ে তারা শিক্ষাব্যবস্থা চালিয়ে গেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া। আশা করছি এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রথম সমাবর্তনে ২০১২ থেকে ফল সেমিস্টার ২০২০ সাল পর্যন্ত সাত হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করেছে। এছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ও আটজন শিক্ষার্থীকে ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।