কষ্টসাধ্য জয় পেলো বাংলাদেশ


admin | Published: 2018-09-24 12:42:10 BdST | Updated: 2024-05-20 03:19:45 BdST

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে জয় ভিন্ন কিছু ছিল না লাল-সবুজদের সামনে। আফগানদের ৩ রানে হারিয়ে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।

আফগানদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন মোহাম্মদ শাহজাদ এবং ইহসানউল্লাহ। নাজমুল হাসান অপুর করা চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন আফগান ওপেনার শেহজাদ। কিন্তু সেই ক্যাচ মিস করে অপুর অভিষেক উইকেটের সুযোগটা নষ্ট করেন মোহাম্মদ মিঠুন। পরের ওভারেই বোলিংয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার ওভারের প্রথম বলেই শান্ত’র হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইহসানউল্লাহ জানাত (২০/১)। ইনিংসের অষ্টম ওভারে রানআউট হন ১ রান করা রহমত শাহ। দলীয় ২৬ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় আফগানিস্তান।

এরপর ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা, ৬৩ রানের জুটি গড়েন ওপেনার  মোহাম্মদ শাহজাদ এবং হাশমতউল্লাহ শাহিদি। ইনিংসের ২৫তম ওভারে মাশরাফি বোলিং আক্রমণে আনেন মাহমুদুল্লাহকে। চতুর্থ বলে বাংলাদেশের জন্য ক্রমেই গলার কাঁটা হয়ে ওঠা শাহজাদকে বোল্ড করেন মাহমুদুল্লাহ। বিদায়ের আগে এই আফগান ওপেনার ৮১ বলে আটটি বাউন্ডারিতে করেন ৫৩ রান। দলীয় ৮৯ রানের মাথায় আফগানদের তৃতীয় উইকেটের পতন হয়। এরপর অধিনায়ক আসগর আফগানকে নিয়ে হাশমতউল্লাহ শাহিদি ৭৮ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ৪০তম ওভারে মাশরাফি ফিরিয়ে দেন আফগান অধিনায়ককে। বিদায়ের আগে আসগরের ব্যাট থেকে ৪৭ বলে আসে ৩৯ রান।

৪৪তম ওভারে মাশরাফি ফিরিয়ে দেন সেট ব্যাটসম্যান হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে। বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ৯৯ বলে পাঁচটি বাউন্ডারিতে করেন ৭১ রান। এরপর ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব ফেরান মোহাম্মদ নবীকে। শান্ত হাতে ধরা পড়ার আগে ২৮ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৩৮ রান। এরপর মোস্তাফিজের করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে ফেরান ৫ রান করা রশিদ খানকে।

এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে এই আফগানদের বিপক্ষেই বড় ব্যবধানে হেরেছিল মাশরাফি-সাকিবরা। আবুধাবিতে সুপার ফোরের চতুর্থ ম্যাচে আবারো মাঠে নামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাহমুদুল্লাহ আর ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত দুটি ফিফটিতে বাংলাদেশ নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৪৯ রান। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর আবুধাবিতে হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ।

আবুধাবিতে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মাঠে নামে দুই দল। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় স্পিনার নাজমুল হোসেন অপুর। আর মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গায় দলে আসেন ইমরুল কায়েস। বাদ পড়েন রুবেল হোসেন। ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পর পর তিন ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ শান্ত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আফতাব আলমের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে রহমত শাহর তালবুন্দি হন তিনি। বিদায়ের আগে ১৮ বলে মাত্র ৬ রান করেন তিনি। দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

মুজীব উর রহমানের করা ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে এলবির ফাঁদে পড়েন ২ বলে ১ রান করা মোহাম্মদ মিঠুন। ১৮ রানের মাথায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায়। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ৩৪ রান। ১২তম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন ফিরে পান মুশফিক। ইনিংসের ১৯তম ওভারে রশিদ খানের বল তুলে মারতে গিয়ে ইসানুল্লাহর হাতে ধরা পড়েন ৪৩ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ৪১ রান করা লিটন দাস। বিদায়ের আগে মুশফিকের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। দলীয় ৮১ রানের মাথায় বাংলাদেশ তৃতীয় উইকেট হারায়। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না হতেই রানআউট হন সাকিব।

দলীয় ৮৭ রানের মাথায় আরেকটি রানআউটে বিদায় নেন সেট ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। বিদায়ের আগে ৫২ বলে দুই চার আর এক ছক্কায় মুশফিক করেন ৩৩ রান। ২৬তম ওভারে দলীয় শতক তুলে নেয় ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ। এরপরই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখে টাইগাররা। ১২৮ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুল্লাহ এবং ইমরুল কায়েস। ইনিংসের ৪৭তম ওভারে বিদায় নেওয়ার আগে মাহমুদুল্লাহ ৮১ বলে তিনটি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৭৪ রান। দলীয় ২১৫ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। ৯ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন মাশরাফি। দেশ থেকে উড়ে গিয়েই মাঠে নামা ইমরুল কায়েস ৮৯ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৭২ রান করে অপরাজিত থাকেন। মিরাজ ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। আফতাব আলম তিনটি আর রশিদ-মুজীব একটি করে উইকেট পান।

গ্রুপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। লঙ্কানদের হারিয়েছিল আফগানরাও। এরপর আফগানদের মুখোমুখি হয়ে বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশ। আর সুপার ফোরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেও হেরেছিল বড় ব্যবধানে। অন্যদিকে, গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার ফোরের ম্যাচে আফগানরা নেমেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাতে, কষ্টার্জিত জয় পায় পাকিস্তান।