পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ


খেলা টাইমস | Published: 2018-09-27 12:49:32 BdST | Updated: 2024-05-19 23:41:31 BdST

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের সবশেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠলো বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান তোলে বাংলাদেশ। টাইগারদের ছুঁড়ে দেয়া ২৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ২০২ রান। সেমি ফাইনালের তকমা পাওয়া ম্যাচে টাইগাররা ৩৭ রানের জয় তুলে নেয়। গতবারের মতো ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে নামবে মাশরাফি-মুশফিক-মোস্তাফিজরা। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায়।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ১২ রানেই টপঅর্ডারের তিন উইকেট হারায়। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মুশফিক-মিঠুন। মুশফিক ১১৬ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৯৯ আর মিঠুন ৮৪ বলে চার বাউন্ডারিতে ৬০ রান করেন। মাহমুদুল্লাহ ২৫, মাশরাফি ১৩, মিরাজ ১২ রান করেন। পাকিস্তানের জুনাইদ খান ৯ ওভারে ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট তুলে নেন। শাহিন আফ্রিদি এবং হাসান আলি দুটি করে উইকেট তুলে নেন। একটি উইকেট পান শাদাব খান।

২৪০ রানের টার্গেটে পাকিস্তানের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন ইমাম উল হক এবং ফখর জামান। ব্যাট করতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ফখর জামান (১)। এরপর দ্বিতীয় ওভারে মোস্তাফিজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবির ফাঁদে পড়েন বাবর আজম। দলীয় ৩ রানেই পাকিস্তান দুই উইকেট হারায়।

চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে আবারো হানা দেন মোস্তাফিজ। তার বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে সাজঘরে ফেরেন সরফরাজ আহমেদ (১৮/৩)। এরপর ৬৭ রানের জুটি গড়েন শোয়েব মালিক-ইমাম উল হক। রুবেলের করা ২১তম ওভারের প্রথম বলে শোয়েব মালিক ব্যক্তিগত ৩০ রানে (৫১ বল) বিদায় নেন। তাকে সাজঘরে ফেরাতে অসাধারণ ক্যাচটি নেন মাশরাফি। ২৬তম ওভারের প্রথম বলে সৌম্য ফিরিয়ে দেন শাদাব খানকে (৪)। মুশফিকের চোটের কারণে উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হন শাদাব। দলীয় ৯৪ রানের মাথায় পাকিস্তান পঞ্চম উইকেট হারায়।

এরপর মোস্তাফিজের করা ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্যক্তিগত ২২ রানে আসিফ আলীকে ফেরানোর সুযোগ পেলেও সহজ ক্যাচ মিস করেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। দলীয় ১৫৫ রানে মিরাজের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৪৭ বলে ৩১ রান করা আসিফ আলি। ৪১তম ওভারে ইমাম উল হককে ফিরিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ। স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ইমাম বিদায় নেওয়ার আগে ১০৫ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৮৩ রান। এর আগে ক্যাচ মিস করার পর দুটি স্ট্যাম্পিং করে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন লিটন।

ইনিংসের ৪৪তম ওভারে মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন হাসান আলিকে (৪)। ফিজের স্লোয়ারে ক্যাচটি লুফে নেন ম্যাশ। দলীয় ১৮১ রানের মাথায় পাকিস্তান অষ্টম উইকেট হারায়। মোস্তাফিজের করা ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নওয়াজ (৮)। এরপর মোস্তাফিজের বলে লিটন আরও একটি ক্যাচ মিস করেন। ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস থামে ২০২ রানে।

মিরাজ ১০ ওভারে ২৮ রানে দুটি উইকেট দখল করেন। মাহমুুদুল্লাহ ১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে তুলে নেন চারটি উইকেট। রুবেল হোসেন ৮ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। মাশরাফি ৭ ওভারের ৩৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সৌম্য ৫ ওভারে ১৯ রান দিয়ে এক উইকেট তুলে নেন।

এর আগে গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে এশিয়া কাপের মিশন শুরু করেছিল গতবারের রানার্সআপ বাংলাদেশ। পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারতে হয়েছিল মাশরাফির দলকে। সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর টুর্নামেন্টে টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় টাইগারদের সামনে। আফগানদের সুপার ফোরের ম্যাচে হারিয়ে ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখে মুশফিক-সাকিবরা।

এদিকে, গ্রুপপর্বে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল হংকংকে উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানের মিশন শুরু হয়। তবে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে হারতে হয় বড় ব্যবধানে। সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় তুলে নেয় সরফরাজ-শোয়েব মালিকরা। অন্য ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে আরেকবার বড় ব্যবধানের পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান।