রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে হয়রানি বন্ধের আন্দোলনে মহিউদ্দিন রনির সংহতি


DU Correspondent | Published: 2022-09-20 01:59:45 BdST | Updated: 2024-04-25 09:32:56 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক জটিলতায় সৃষ্ট নানা রকম হয়রানি বন্ধ ও ৮ দফা দাবিতে গতকাল থেকে ফের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ'র সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন রেলওয়ে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা মহিউদ্দিন রনি।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি সংহতি প্রকাশ করেন।

 

মহিউদ্দিন রনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের হয়রানি নিরসনের লক্ষ্যে ৮ দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। সম্মানিত শিক্ষক মহোদয়রাও যেখানে গেলে হয়রানির শিকার হন, সেখানে ছাত্র, কর্মচারী সবার সমন্বয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ এবং পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে প্রশাসনিক ভবন আধুনিকায়ন সম্ভব।

তিনি বলেন, গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সকল সাংবাদিক বন্ধুদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। দলমত নির্বিশেষে হাসনাত ভাইকে সহযোগিতা করুন। এ দাবি আমাদের সবার।

জানতে চাইলে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের কর্মচারীদের কাজে সময়মতো উপস্থিত না হওয়া, লাঞ্চের আগেই অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়া, অযথাই ছাত্র হয়রানি করা, অহেতুক দায়িত্ব অবহেলা, রুম নম্বর বিড়ম্বনা, সনাতন পদ্ধতি ও ছাত্র হয়রানি এখনো রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের নিয়মিত ঘটনা। তার প্রতিবাদে আমি এখানে অবস্থান নিয়েছি। নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করছি। মহিউদ্দিন রনিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে সই করেছেন। আপনারা যদি মনে করেন রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সমস্যা সমাধান হওয়া উচিত তাহলে দয়া করে সই করে যান। আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমার অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

 

সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি পেশ করেন হাসনাত। দাবিগুলো হলো

১। শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসনের জন্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করতে হবে। যেখানে সেবাগ্রহীতারা সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদির ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

২। প্রশাসনিক সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটালাইজড করতে হবে।

৩। নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিসগুলোর অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৪। প্রশাসনিক ভবনে অফিসগুলোর প্রবেশদ্বারে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করতে হবে। ডিসপ্লেতে অফিসগুলোর নাম, কক্ষ নম্বর ও সেখানে প্রদত্ত সেবার বিবরণী, কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি প্রদর্শন করতে হবে।

৫। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক ভবনের ক্যান্টিনেরও সংস্কার করতে হবে।

৬। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মানসিক সেবা প্রদানকারী বিভাগ ও সেন্টারগুলোর শরণাপন্ন হতে হবে।

৭। অফিস চলাকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত থাকতে পারবে না। সে নিরিখে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবগুলোতে স্থানান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

৮। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনকালীন প্রচারণা পরিবেশবান্ধব করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানিকর ও পরিবেশ বিপর্যয়কারী অপ্রয়োজনীয় পোস্টার লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।