ঢাবিতে কি হঠাৎ করেই অনিয়ম শুরু হয়ে গিয়েছে?


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2017-09-30 04:09:08 BdST | Updated: 2024-05-12 02:41:46 BdST

দিদার মানিকঃ ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের ভিসি পরিবর্তন হয়েছে কিছু দিন হলো। ড. আখতারুজ্জামানের ভিসি হওয়ার মধ্য দিয়ে ড. আরেফিন যুগের সমাপ্তি ঘটেছে। কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, নতুন ভিসি নিয়োগের পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম এবং গবেষণায় চৌর্যবৃত্তিসহ বিভিন্ন বিষয় অনিয়ম গণমাধ্যমে উঠে আসছে। ক'দিন আগ পর্যন্ত যেসব শিক্ষক উন্নয়নের ফিরিস্তি প্রচার করতেন তারাই এখন অনিয়ম প্রচার করছেন।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করে অনিয়ম শুরু হয়ে গিয়েছে? কিন্তু ব্যাপারটি আসলেই তেমন না। আগের প্রশাসনের সময়ও এরকম অনিয়ম হয়েছে। যার কিঞ্চিত গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এর কারণ অনেকেরই জানা। ড. সিদ্দিক সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক। আর ক্যাম্পাসে যারা সাংবাদিকতা করে তাদের বেশিরভাই সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র। একই সাথে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্তব্যরত সাংবাদিক ও কর্তাব্যক্তিরা আরেফিন সিদ্দিকের হয় সরাসরি ছাত্র না হয় কোন এক সময় তারা এ বিভাগে পড়েছে। ফলে আরেফিন সিদ্দিকের দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে খুব কমই নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।

গত ৮ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার খানেক শিক্ষক নিয়োগ হলেও অনিয়ম নিয়ে হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া অন্য কোথাও তেমন কোন সংবাদ চোখে পড়েনি। অপরদিকে, আরেফিন সিদ্দিককে নিয়ে কোন সংবাদ পরিবেশিত হলে তার কাউন্টারে তার সমর্থকরা কলামের পর কলাম লিখে যেতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্য আওয়ামীলীগপন্থী শিক্ষকদের দু'টি বলয়। যার একটি আরেফিন সিদ্দিককে ঘিরে। তিনি সরাসরি নেতৃত্ব না দিলেও ভিসি হওয়ার সুবাধে তাকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল বলয়টি। অপরটি এন্টি-আরেফিন সিদ্দিক গ্রুপ। আরেফিন সিদ্দিককে সরিয়ে দেওয়ায় শিক্ষকদের এই গ্রুপটি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে। অনেক শিক্ষক ডাই-হার্ট আওয়ামীলীগ হলেও তারা সে সময় বেশি সুবিধা করতে পারেননি। এ জন্য অনেকই আরেফিন সিদ্দিকের ওপর নাখোস।
বর্তমান ভিসি ড. আখতারুজ্জামান নিয়োগ পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই তিনি তার মতো করে প্রশাসন সাজাবেন। যেটা সব ভিসি করেন। তিনিও যে অনিয়ম করবেননা সেটাও অনুমান করার কারণ নাই। গত ৮/৯ বছরে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে যে পরিমান অনিয়ম হয়েছে, তা থেকে তিনি বের হতে পারবেন কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে।

এতো প্যাঁচানো কথার মূল বার্তা অনেক ছোট। যেটা প্রথমে একটু বলার চেষ্টা করেছি। মোট কথা হচ্ছে, ড. আরেফিন সিদ্দিক ভিসি হিসেবে যতভাবে সমর্থন পেয়েছেন, ড. আখতারুজ্জামান সে সমর্থন পাবেন না। কারণ, তিনি সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক নন। ফলে, এখন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরেণর অয়িনম ও দুর্নীতির খবর সহজেই জানা যাবে। এতোদিন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনীতির কথা শুনিয়েছেন তারাই এখন অনিয়মের কথা প্রচার করবেন। গণমাধ্যম যা সহজেই লুফে নিবে।

গ্র্যাজুয়েট টিচিং এসিস্ট্যান্ট, টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি 

লেখাটি দিদার মানিকের ফেসবুক থেকে নেয়া 

এমএসএল