![](https://campustimes.press/uploads/shares/1683435672.Mohammad-Ataul-Karim-2023-05-07-11-05-40.jpg)
পৃথিবীর সেরা বিদ্যাপীঠ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা (‘ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি)’-‘ডিপিল’) করার সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ আতাউল করিম নামে একজন বাংলাদেশি ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন বিভাগের অধীন ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপার্টি ল’(মেধাস্বত্ব আইন) নিয়ে গবেষণা করবেন।
স্বপ্নের ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর পরই সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন বলে জানিয়েছেন আতাউল করিম।
আতাউল লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন গ্রামের মৃত মৌলভী আবদুল কাদেরের ছেলে।
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আতাউল করিম তার বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান।
তার বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক।
মা রোকেয়া বেগম একজন গৃহিণী। আতাউল একাধারে আইনজীবী, শিক্ষাবিদ এবং আইন গবেষক। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ২০১৫-২০ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন তালিকাভুক্ত আইনজীবী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকতা ও আইন পেশায় নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি আতাউল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আইন বিষয়ক বহু প্রতিষ্ঠানের গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন। এর মধ্যে জার্মানির আইপিআর, এরিকসন, সুইজারল্যান্ডে জাতিসংঘের দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন অন্যতম।
আতাউল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে এলএলবি (সম্মান) এবং এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি তুরস্কের আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপার্টি -ল’(পেটেন্ট এবং ডিজাইন আইন) বিষয়ে এলএলএম এবং জার্মানির বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট থেকেও একই বিষয়ে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পৃথিবীর বহু বিখ্যাত আইন বিষয়ক জার্নালে তার অনেক মৌলিক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। আইন বিষয়ে গবেষণায় অবদান রাখার জন্য ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্বর্ণপদক পান।
আতাউল করিম গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই আতাউল অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। গ্রামেই তিনি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেম। পরে বাবার শিক্ষকতার চাকরির সুবাদে ঢাকায় গিয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০০২ সালে তিনি মাধ্যমিক এবং ২০০৪ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে তিনি ঢাবির আইন বিভাগে ভর্তি হন। ২০১২ সালে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে তিনি ঢাবি থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতি অঙ্গনেও তিনি ছিলেন ঢাবির সুপরিচিত মুখ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশেনে তার অংশগ্রহণে প্রচারিত নোয়াখাইল্লা ভাষার একটি বির্তক প্রতিযোগিতায় কোটি দর্শকের মন কেড়েছিল।
আতাউল করিম বলেন, ভবিষ্যতে আমি বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপার্টি ‘ল’(বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি) নিয়ে কাজ করতে চাই। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা শেষে আমি সেই জ্ঞান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দিতে চাই। বিশ্ব বিখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গবেষণার সুযোগ পাওয়ায় আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
প্রসঙ্গত, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে ডিপিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীসহ ৩০ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন।