
ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাড়া জাগানো করতালির মধ্যে দিয়ে পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম রোববারের আশীর্বাদ ও ভাষণ দেন। এ ভাষণের মূল প্রতিপাদ্য ছিল—বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান। বিশেষভাবে তিনি ইউক্রেন ও গাজার চলমান যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান এবং গাজার মানুষের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানান।
আজ রোববার সিএনএন জানিয়েছে, পোপ লিওর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে হলেও তিনি বড় হয়েছেন পেরুতে। ভ্যাটিকানের একজন অভিজ্ঞ প্রশাসক হিসেবে তাঁর আলাদা পরিচিতি রয়েছে। নির্বাচনের আগে কেউ ভাবেননি, একজন মার্কিন নাগরিক পোপ নির্বাচিত হবেন। অথচ অল্প কদিনেই তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিকদের জন্য এক নতুন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
ইতালীয় ভাষায় দেওয়া ভাষণে পোপ লিও বলেন, ‘পোপ ফ্রান্সিস আমাদের যেই বার্তা দিয়ে গেছেন, তা তরুণ প্রজন্মকে বরণ করে নেওয়া ও সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান। আমাদের উচিত একে অপরের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করা।’
পূর্বসূরি পোপ ফ্রান্সিসের একটি মন্তব্য তুলে ধরে পোপ লিও বলেন, ‘বিশ্ব এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের টুকরো টুকরো অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আমি বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—যুদ্ধ আর নয়!’
তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি, বন্দী বিনিময় এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানান এবং স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার মাধ্যমে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান।
পোপ লিও তাঁর প্রার্থনার সময় শান্তির বার্তা দেন এবং গানের সুরে ঐতিহ্যবাহী ইস্টার প্রার্থনা সংগীত ‘কুইন অব হ্যাভেন’-এর একটি অংশ পরিবেশন করেন, যা ভার্জিন মেরির উদ্দেশে নিবেদিত।
রোম নগর কর্তৃপক্ষ জানায়, সেদিন সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে প্রায় দেড় লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ‘জুবিলি অব ব্যান্ডস’-এর অংশ হিসেবে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ব্যান্ডদল ঐতিহ্যবাহী গান ও পপ সংগীত পরিবেশন করে।
গতকাল শনিবার কার্ডিনালদের সঙ্গে তাঁর প্রথম বৈঠকে পোপ লিও জানান, তিনি তাঁর নাম রেখেছেন পোপ লিও ত্রয়োদশের আদর্শ অনুসরণ করে। শিল্পবিপ্লবের সময়ে পোপ লিও ত্রয়োদশ সমাজ ও শ্রমজীবীদের অধিকার নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করেছিলেন।
আগামী ১৮ মে পোপ লিওর আনুষ্ঠানিক অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে। সে সময় বিশাল জনসমাগমের আশা করা হচ্ছে।