বিএসএমএমইউতে ‘দলীয় বিবেচনায়’ ২০০ চিকিৎসক নিয়োগের পায়তারা


জাগোনিউজ২৪ ডট কম | Published: 2017-10-05 15:29:25 BdST | Updated: 2024-05-13 20:22:55 BdST

‘তোমাদের কাছে রিকোয়েস্ট এখানে তোমরা কোনো এরকম অস্থিতিশীল করো না। আমাদের পক্ষে যতগুলো পোস্ট বের করা সম্ভব আমরা বের করে দুই সপ্তাহের পরে না, দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা বিজ্ঞাপন দেব।’

এ উক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) অনুসারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে এক বৈঠকে ভিসি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

জানা গেছে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুইশ মেডিকেল অফিসার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। খুব শিগগিরই দলীয় বিবেচনায় চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জোর গুঞ্জন চলছে।

গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত এক মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভিসির এহেন কথোপকথনে স্বাচিপ সমর্থিত চিকিৎসকদের নিয়োগ দিতেই এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠে।

গতকাল মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার এবং ২০ জন ডেন্টাল সার্জারির মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হবে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা ওই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গত ২১ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৩ জন চিকিৎসককে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন পাঁচ সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বেঞ্চ। প্রকাশিত ভিডিও ক্লিপে এ বিষয়ে ভিসি বলেন, এই চিকিৎসকদের বিষয়ে প্রচণ্ড ফাইট করেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

bbvc

গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাচিপের চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের ভিডিও কথোপকথন ও দলীয় বিবেচনায় চিকিৎসক নিয়োগ প্রদানের আয়োজন চলছে এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান বুধবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে দুইশ চিকিৎসক নিয়োগের পূর্বসিদ্ধান্ত রয়েছে। এ লক্ষ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। দলীয় বিবেচনায় নয়, পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে যোগ্যরাই চাকরি পাবে।

ভিডিও কথোপকথনে দলীয় চিকিৎসক নিয়োগের ইঙ্গিত রয়েছে- এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ভিডিওতে কি দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হবে এমন কিছু বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শূন্যপদ খুঁজে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে এমনটা বলা হয়।

তিনি বলেন, চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণায় বিএসএমএমইউ এখন দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে নষ্ট করতে চক্রান্ত চালাচ্ছে। তারাই গোপনে ভিডিও করে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বরের ভিডিও ক্লিপে যা বলেছেন ভিসি
‘তোমরা অনেকেই অনেক কথা বলতে পার, তোমরা আমাদের কাছে আসবা, আমরা কখনই মানা করব না। কিন্তু কথা হইল এমন কিছু পরিবেশ সৃষ্টি করো না যাতে আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হই। এখন তোমরা সিয়েচুশনটা একটু ফলো করবা। তোমাদের সঙ্গে অনেক কথা আছে। এখন সিচিউশনতো পালটাচ্ছে। সে কারণে পিছিয়ে আছি। কিন্তু আমার যত এজেন্ডা আছে দায়িত্বের পর তার মধ্যে টপ প্রায়োরিটি হচ্ছে জুনিয়রদের চাকরি দেয়া ছিল...আছে। এই চেয়ারে বসার জুনিয়রদের চাকরি দেয়া টপ প্রায়োরিটি ছিল আছে। তোমরা এখন এমন একটা পর্যায় আসছো যে, তোমার এবং আমাদের মধ্যে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জায়গায়। যেখানে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। মাঝখানে ২০০ ডাক্তারের চাকরি নিয়ে আমরা প্রচণ্ড ফাইট করেছি...। বাংলাদেশের একটি বড় ইতিহাস যে সুপ্রিম কোর্টের রায় ...। এটা আমাদের জন্য বড় একটি ঘটনা মাঝখানে ঘটে গেছে। তোমরা এটা জানো। বড় একটি ক্ষতি হয়ে গেছে। একটা একদিক নয়, দুইদিক দিয়ে। এর পেছনে আমাদেরই লোকজন আছে। যাই হোক এখন তোমাদের কাছে রিকোয়েস্ট এখানে তোমরা কোনো এরকম অস্থিতিশীল করো না। আমাদের পক্ষে যতগুলো পোস্ট বের করা সম্ভব আমরা বের করে দুই সপ্তাহের পরে না, দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা বিজ্ঞাপন দেব।’

সংবাদটি জাগোনিউজ২৪ থেকে নেয়া 

এমএসএল