
স্পেনের কাতালোনিয়া অঞ্চল রাষ্ট্র গঠনের অধিকার পেয়েছে বলে দাবি করেছেন কাতালান নেতা চার্লস পুইগডেমন্ট।
কাতালোনিয়া অঞ্চলের স্বাধীনতার প্রশ্নে রোববার গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এ দাবি করেন তিনি। গণভোটকে ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে থাকা কাতালান জনগোষ্ঠী ভোট দিতে আসে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসন বাধার সৃষ্টি করলেও ভোট গ্রহণ হয়েছে।
স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার এ গণভোটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এর আগে দেশটির সাংবিধানিক আদালত কাতালানদের স্বাধীনতার এ গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করে। কিন্তু কাতালানরা স্বাধীনতার পক্ষে অনড় থেকে গণভোট আয়োজন করে এবং রোববার কাতালোনিয়া অঞ্চলে ভোট গ্রহণ হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের দমন-পীড়ন সত্ত্বেও রোববারের ভোটের পর কাতালান নেতা পুইগডেমন্ট দাবি করেছেন, কাতালানদের জন্য এককভাবে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার সময় এসেছে।
গণভোটের ফলাফল ঘোষণায় কাতালান কর্মকর্তারা বলেছেন, গৃহীত ভোটের মধ্যে স্বাধীনতার পক্ষে পড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি। তবে মোট ভোটের ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ গৃহীত হয়েছে।
এদিকে, ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে কাতালানদের সংঘর্ষ হয়েছে। ভোটাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে পুলিশ। রোববারের সংঘর্ষে প্রায় সাড়ে ৩৫০ লোক আহত হয়েছে। অনেক ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ও বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।
অন্য কাতালান নেতাদের পাশে নিয়ে রোববার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে পুইগডেমন্ট বলেন, ‘একটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার পেয়েছে কাতালোনিয়ার নাগরিকরা।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার সরকার আজকের (রোববার) ভোটের ফলাফল কয়েক দিনের মধ্যে কাতালান পার্লামেন্টে পাঠাবে, যেখানে আমাদের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষিত রয়েছে এবং গণভোটের রায় অনুযায়ী কাজ করবে পার্লামেন্ট।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উদ্দেশে পুইগডেমন্ট বলেন, অন্য কোনো উপায় নিয়ে ভাবা উচিত হবে না তাদের। অর্থাৎ ইইউর পূর্ণ সমর্থন চেয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় গণভোটকে প্রত্যাখ্যান করে একতরফা স্বাধীনতার বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, কাতালানদের বোকা বানিয়ে একটি অবৈধ ভোটে আনা হয়েছে। এ গণভোটকে ‘গণতন্ত্রের প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
রোববার দিনভর কাতালোনিয়ায় স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। বিপক্ষের চেয়ে পক্ষেই বড় বড় মিছিল বেশি হয়েছে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন
জেএস/ ০২ অক্টোবর ২০১৭